Thursday, April 19, 2018

Prem # 19

বিকেলগুলো আজকাল বড্ড বিষাদ মেখে থাকে।
দুপুরটা গুমরে উঠলে,
মনখারাপের উঠোন জুড়ে বৃষ্টি নামে
এক পশলা।
বৃষ্টি থামলে, সেখানে ছড়িয়ে যায়
অগুনতি কাঁচের টুকরো।
ভাঙা আয়নায় প্রতিবিম্ব খুঁজি-
তোর, আমার, আমাদের ফেলে আসা গল্পের।

ড্রইংরুমের সোফার একলা হাতলে
মাথা রেখে আকাশ দেখি,
নিরলস অলসে, অবিচ্ছেদ অবসাদে।
ওই পুব কোণে একটা ঝড় ওঠে যদি...
যদি উড়িয়ে দেয় সব অভিমানের মেঘ...
যদি হাওয়ায় ভেসে আসে
তোর একখানা চিঠি,
পথ ভুলে, ভুল ঠিকানায়।

কিছু কিছু নাটিকার তো কোনো মহড়া হয় না!
বা কোনও কোনও কল্পনার, চিত্রনাট্য!

Prem #18


অংকেরা ক্রমশই ভুল হতে থাকে।
মনখারাপের শহরে, বৃষ্টিরা
অন্য সুরে ঝরে,
অচেনা তাল, অজানা রাগিনী।
ডাকবাক্সে অপ্রয়োজন অপেক্ষায় থাকা
চিঠিগুলোর গায়ে বসন্ত ফ্যাকাশে হয়।
চেনা সম্পাদ্যরাও আর মেলে না কিছুতেই।

একাকীত্বের একটা নিজস্ব গন্ধ আছে,
মেঘলা দিনের অভিমানী বাতাসের মতো।
সেই গন্ধে নেশা জাগে...
বিষন্নতার নেশা।
পলাশ সেদিন অন্য ভাষায় কবিতা শোনায়,
ঠিক ভুলের পরিমিতিতে গরমিলের মরচে ধরে।

মনকেমনের আয়তন মাপা যায় কিসে?
পরিধি? ব্যাসার্ধ? ঘনত্ব?
কি তাদের একক?

হাজার মাইল হাঁটার পর
চেনা রাস্তারা একবার ভুল হবে কি?
ভুল রাস্তার জ্যামিতি কি আমায়
নিয়ে যেতে পারবে তোর পাড়ার মোড়ে?

এইভাবেই অংকগুলো রোজ ভুল হতে থাকে।
ভুল উত্তর ভিড় বাড়ায় ভালোবাসার খাতায়।

Prem #17

ফিরে যেতে চাইলেও ফেরা যায় না আর।

অনন্তকাল সাথে হাঁটার সাধ নিয়ে
শুরু হয় যে পথ,
সে যে কখন আলাদা আলাদা বাঁক খুঁজে নেয়,
জানা যায় না।
ছোটবেলার ড্রইং খাতায়,
সমান্তরাল রাস্তারা এক হয়ে যেত
কোনও এক মোড়ের মাথায়।
সেই মিলন বিন্দু হাতড়ে ফিরি আমি,
দূরে... আরও দূরে...
হাজার ছায়াপথ পেরিয়েও যার দেখা মেলে না।
শুধু দু'টো পথের ব্যবধান
ক্রমেই তীব্র হয়ে ওঠে,
আঁকা হয়ে চলে অসমীকরণের গ্রাফ।


পিছন ফিরলে দেখি,
ফেলে আসা পথের বাঁকে বাঁকে
হারিয়েছে সবই-
সুখ, স্মৃতি, সুখস্মৃতি...
নিজের বলে কেউ নেই আর,
কেউ ছিলও না হয়তো কোনদিন।
দিগন্তরেখায় দাঁড়িয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকেনা কেউ।
তাই ফিরে যাওয়া বলেও কিছু নেই আমার।

দু'টো সমান্তরাল পথের মিলে যাওয়ার
আশা বুকে বাঁচিয়ে রেখে,তাই,
এখন শুধু হারিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।

Prem # 16

কি যে হয় এক একটা দিন-
কুয়াশা ভেজা জানলার শার্সির
ভাঙা কোণের ফাঁকটুকু দিয়ে
মনখারাপ চুঁইয়ে পড়ে।
ভাবনা আসে-
শেষ লেখাখানা কি আজকেই?
কি থাকবে তাতে?


যা কিছু পেতে ভীষণ ইচ্ছে করে-
আবছা ঘুমের মাঝে মায়ের কপালের
লাল টিপের মতো প্রিয় কিছু,
বা জ্বর কপালে তার ঠান্ডা আদরের মতো-
যা খুব আরামের-
সেসবের কথাই লিখব কি?

শীতের দুপুরে ছাদের অলস আলসে,
মিঠে রোদ, কমলালেবুর খোসা।
ওদিকের ছাদে কোনও এক নববধূর এলোচুল,
গলির মুখে বেড়াল ছানাগুলো খেলা করে-
এমন কোনো আটপৌরে ছবি আঁকব কি?

সন্ধ্যে নামে,
দূরে কোথাও শাঁখ বেজে ওঠে।
মনখারাপ আরো তীক্ষ্ণ হয়।
একটা নরম ছোঁয়া পাওয়ার আকুতি
বিবশ করে তোলে ভেতরখানা।
ইচ্ছে করে- কেউ যদি আসে,
ভালোবাসায় মুড়ে দিয়ে যায়
আমার সব ব্যথা, সব কষ্ট!

রাত গভীর হয়।
মেঘগুলো কোন ফোঁকর গলে
ঠাঁই নেয় আমার চোখের পাতায়।
বৃষ্টি নামলে বুঝতে পারি-
সব চাওয়াগুলো পূরণ হলে
শেষ লেখাটা হয়তো আজ লিখতেই হত না !